“যেমন ধরো নভেম্বর” … শর্মিষ্ঠা রীত

  • লেখা- শর্মিষ্ঠা রীত
  • অলঙ্করণ – শুভ্রা

ঠিক কোন প্রিয় বাবুই বা ফিঙে পাখি যেভাবে আমাকে দেখতে পেলেই বা আমার উপস্থিতি টের পেলেই ফুরুত করে উড়ে পালায়, নভেম্বরের দুপুরের মিঠে রোদও অনেকটা তেমন। শীত আসার আগের এই মাসটার নাম হেমন্ত হলেও এই মাসের বৈশিষ্ট্যের কোন ঠিক ঠিকানা নেই। নেই কোন যথার্থ সংজ্ঞা। ঠিক যেমন জানা যায় না এমাসের কোন সময় কোন ফুলটা ফোটে? কখনই বা পাতা ঝরা শুরু হয়? আর একদম বিকেলে যখন শীত আসছে কি আসছে না সেটার আঁচ করতে চেষ্টা করি ঠিক তখন যে হাওয়া দেয়, সে হাওয়ার নামটাই বা কি?

এ এক অদ্ভুত মাস ঠিক নিস্তব্ধ নয় অথচ একটা গাঢ় কুয়াশার চাদর দেখে একলা ছাদে পরস্পর মুখোমুখি থমকে থাকার দিন। যার একপাশ ফিরলে কখনো হলুদ বন, কখনো রোদ পালানো অসংখ্য পুরনো বিকেলের হাতছানি, কখনো চেনা কণ্ঠস্বরের নিঃশব্দ বিপ্লব, কখনো বা শৈশবে লজেন্সের মোড়কের মধ্যে পাওয়া পুরনো স্টিকার।
ঠিক যেমন ভারী বোঝা মাথায় নির্দ্বিধায় হেঁটে যায় কোন এক মেয়ে যার দুধারে অজস্র সোনালী গম ক্ষেত বিকেল পেরিয়ে এসে ক্রমশ সন্ধের দিকে এগিয়ে যায় ঠোঁটে লেগে থাকে তার প্রিয় কোন গান। সে গান গুনগুন করতে করতে সে বিকেলের দিকে ফিরে তাকায় না তাকে উপেক্ষা করে,আর সেই গম খেতের আনাচে-কানাচে চুপ করে বসে থাকে হেমন্ত। মেয়েটা গান গাইতে গাইতে অনেক দূর এগিয়ে যায়। তার তার মাথায় বোঝাই পাতা-কাঠ। দ্বিধাহীন ভাবনাহীন সে এগিয়ে যায় হেমন্তের মাঠ বরাবর আঁকাবাঁকা পথ ধরে, সে ফিরে তাকায় না। সেই নাম‌ না জানা হাওয়া বয়। গমের শীষগুলো অল্প দুলে ওঠে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.